সোহিনী আলম (ইংরেজি: Sohini Alam) একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুদ ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পী।
Table of Contents
সোহিনী আলম । বাংলাদেশী বংশোদ্ভুদ ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পী
শৈশব
সোহিনী আলম যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন (১৯৭৮ সালে) এবং লন্ডন এবং বাংলাদেশের ঢাকায় বেড়ে উঠেন। তার জন্ম সংগীত পরিবারে এবং তিনি তার মা হিরন আলম ও তার খালা জান্নাত আরা ও ফেরদৌস আরা’র কাছে গান শিখেন। তিনি বর্তমানে নজরুল সঙ্গীতে বাংলাদেশী শিল্পীদের মধ্যে পথিকৃৎ। সোহিনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আঙ্গলো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
ক্যারিয়ার
কন্ঠশিল্পী হিসেবে, সোহিনী গান গেয়েছেন নাচ, থিয়েটার এবং সিনেমার জন্য। তিনি ““ক্ষ”” এবং “লক্ষীটেরা” প্রধান কন্ঠশিল্পী।তিনি আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন স্টেজে, রেডিওতে এবং টেলিভিশনে কাজ করেছেন। সোহিনী কারুকাজ প্রতিষ্ঠান “কমলা কালেক্টিভ” এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ইভেন্ট কোম্পানী “রাগা টু রেগি” এর তত্ত্বাবধায়ক।
সোহিনী আলম প্রাথমিকভাবে নজরুল সঙ্গীতে উপর প্রশি”ক্ষ”ণ নেন, কিন্তু তার শাখা-প্রশাখা লোক সঙ্গীত, রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং আধুনিক সঙ্গীতে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি প্রধানত বাংলায় গান করেন কিন্তু এর শৈল্পিকদিক বিবেচনা করে তিনি বাংলা গানকে ইংরেজিতে রুপান্তর করে গান।
ইংরেজি/স্প্যানিশে লক্ষী টেরা এবং ইংরেজি/হিন্দিতে কঞ্জুস-দ্য মাইজার (Kanjoos-The Miser), ডিক ইউটিংটন গোস বলিউড (Dick Whittington Goes Bollywood) এবং বলিউড সিন্ড্রেলা (Bollywood Cinderella) -তে গান করেন। তিনি তামিল ও রোম ভাষায় নাগিন সুরে গানও গেয়েছেন।
ব্যান্ড
২০০৭ সালে অলিভার উইক’স এর সাথে সোহিনী ““ক্ষ”” নামের একটি ব্যান্ড গঠন করে। এই ব্যান্ডের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, বেন হিলইয়ার্ড এবং ডেরেল স্ক্রাল। “ক্ষ” ব্যান্ড হারানো দিনের গানগুলো সমসাময়িক সুরে পরিবেশন করত। এই ব্যান্ডটি “অর্নব” সাথে ২০০৮ সালে “দৃষ্টিপাত” এর আয়োজনে লন্ডনে একটি কনসার্ট করে।
“ক্ষ” তার প্রথম এলবামের জন্য কাজ করে এবং ২০১২ সালের মার্চে তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আমার সোনার বাংলা” গানটি প্রথমে বের করে। ২০১২ সালে র ডিসেম্বরে, এই গানের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশেষ করে বাংলাদেশী সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেল এবং রেডিওসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে স্থান পায়।
এর ফলে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীরা ব্যান্ডের এই গান নিয়ে অনেক আলোচনা করে, যা কিনা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। ২০১৩ সালের এপ্রিলে, “ক্ষ” ব্যান্ড “অ্যালকেমী ফেস্টিভ্যল” –এর অংশ হিসেবে সাউথ ব্যাঙ্ক সেন্টারের পার্সেল হলে সঙ্গীত পরিবেশন করে।
সিনেমার গান
তাকে কিছু প্রোডাকশনেও সঙ্গীত পরিবেশন করতে দেখা যায়। উল্লেখযোগ্য হলঃ
- বিরঙ্গনাঃ ইউমেন অব ওয়ার (Women of War), একটি কমলা কালেক্টিভ প্রোডাকশন। যাতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের নিয়ে কাজ করে।
- জাস্ট সো, ফার্রুক ধন্দী কর্তৃক পরিচালিত “রুদইয়ার্ড কিপ্লিং” এর “জাস্ট সো স্টোরিস” ভিত্তিক একটি গীতিনাট্য সংস্থা। যার প্রথম পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয় ২০১২ সালে রিভার সাইড স্টুডিওসে।
- এ গোল্ডেন এইজ, “তাহমিমা আনামের” একটি স্টেজ প্রোগ্রাম। ২০১০ সালে সাউথ ব্যাঙ্ক সেন্টারে যার একটি পরিবেশনা পুরস্কার জিতে।
- দ্য ডেমন’স রিভেঞ্জ, বাংলা মহাকাব্য “মেঘনাদবধ কাব্য” ভিত্তিক একটি পরিবেশনা, যা অনুষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে।
তিনি একটি প্রামাণ্য চিত্র “DOTS” এবং দুইটি সিনেমার জন্য গান করেন। সিনেমা দুইটি হল “দ্য লাস্ট ঠাকুর (২০০৮) ” এবং “লাইফ গোস অন (২০০৯)“।
স্টেজ শো এবং যৌথ পরিবেশনা
তাকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের বাংলা টিভি চ্যানেল যেমনঃ বাংলা টিভি, চ্যানেল এস, দেশ টিভি,এটিএন বাংলা এবং চ্যানেল আই তে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায়। সাউথ এশিয়ান গেমসে তার পরিবেশনা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে প্রচারিত হয়।
সোহিনী আলম বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন এবং স্পেনে বিভিন্ন স্টেজে গান পরিবেশন করেছেন। সঙ্গীত দল “আমরা ক জন” এর অংশ হিসেবে, ২০০৩ এবং ২০০৮ সালে তিনি বোস্টনে দুইটি এবং ২০১০ সালে লন্ডনে বিশাল কনসার্ট করেছেন। তিনি ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে দৃষ্টিপাতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।
২০১০ সালে লন্ডনের বাংলা সংস্কৃতির বিশাল উৎসব বৈশাখী মেলাতেও তিনি গান পরিবেশন করেছেন।
সোহিনী ব্রিটিশ-এশিয়ান বংশীবাদক অরূন ঘোষের সাথে যৌথভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশনা করেছেন। তিনি বাংলাদেশী শিল্পী লাবিক কামাল গৌরবের সাথেও কাজ করেছেন, তারা যৌথভাবে ২০১০ সালে তারা আর্টসে একটি সঙ্গীত অনুষ্ঠানও করেন। তিনি বাংলাদেশী বেসরকারী সংস্থা (NGO) ব্র্যাক কর্তৃক মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা গানের এলবাম “নারী” তেও গান গেয়েছেন।
আরও দেখুনঃ