শায়ান চৌধুরী অর্ণব । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক

শায়ান চৌধুরী অর্ণব একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক। প্রথমদিকে তিনি বাংলাদেশী বাংলা ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে কাজ করলেও পরবর্তীকালে প্রেয়ার হল নামে আলাদা একটি ব্যান্ড গঠন করেন। বর্তমানে তিনি কোক স্টুডিও বাংলা প্রথম মৌসুমের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন।

 

শায়ান চৌধুরী অর্ণব । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক

 

শায়ান চৌধুরী অর্ণব । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক

প্রাথমিক জীবন

শায়ান চৌধুরী অর্ণব ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় জন্ম নেন। তার বাবা চিত্রশিল্পী স্বপন চৌধুরী। তিনি ঢাকার উইল্‌স্‌ লিট্‌ল্‌ ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন, তবে এর কিছুদিন পর দ্বিতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নের জন্য তাকে পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতায় সাউথ পয়েন্ট স্কুলে পাঠানো হয়। অর্ণব বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ ভবন থেকে মাধ্যমিক এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন থেকে স্নাতকোত্তর (এমএফএ) সম্পন্ন করেন।

অর্ণবের চাচা তপন চৌধুরী বাংলাদেশের একজন সঙ্গীতশিল্পী।

সঙ্গীত জীবন

সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালীন সময়ে শায়ান চৌধুরী অর্ণব এস্রাজ শেখা শুরু করেন। পরবর্তীকালে ধীরে-ধীরে সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারা, বিশেষ করে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের উপর তিনি জ্ঞান অর্জন করেন। বিদ্যালয়ে থাকাকালীন তিনি গিটার এবং কিবোর্ড বাজানো শুরু করেন। শান্তিনিকেতনের বাউল গান তার পরবর্তী সঙ্গীতে ছাপ ফেলে। ১৯৯৭ সালে অর্ণব নিজের কিছু ভারতীয় সঙ্গীদের সাথে বাংলা নামে ব্যান্ডদল গঠন করেন। পরবর্তিতে বুনো এবং আনুশেহ্‌ অনাদিল দলটিতে যোগ দেয়।

 

শায়ান চৌধুরী অর্ণব । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক

 

শান্তিনিকেতন থেকে বিদায় নিয়ে অর্ণব বাংলাদেশে ফিরে এলে বাংলা একটি পরিপূর্ণ বাংলাদেশী ব্যান্ড হিসাবে পরিচিত পায় যা ছিলো অর্ণব ও অন্যান্য ব্যান্ড সদস্যদের বহুদিনের স্বপ্ন। অর্ণব বাংলা ব্যান্ড ছাড়াও তিনি প্রেয়ার হল নামের একটি ব্যান্ডেরও সদস্য।

২০০০ সালে তিনি বন্ধন নাটকের সূচনাসঙ্গীতে কণ্ঠ দেন এবং গানটি সেসময় বাংলাদেশের টেলিভিশন দর্শকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

২০১০ সাল থেকে তিনি আধখানা মিউজিক কোম্পানির অধিনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এখানে তিনি মিউজিক ভিডিও, প্রামাণ্যচিত্র এবং বিজ্ঞাপন ভিডিও ইত্যাদির নির্দেশনা দেন।সেখান থেকেই তার সঙ্গীতের সফর শুরু হয়। পাঠভবনে ছাত্রদের গাছতলায় গুরুশিষ্য পরম্পরায় পড়ানো হতো। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই ক্লাস মুলতুবি রাখা হত। এই সময় অর্ণব তার কিছু বন্ধুদের সাথে বসে গান লিখতেন ও তাতে সুরারোপ করতেন।

 

শায়ান চৌধুরী অর্ণব । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক

 

ব্যান্ডের পাশাপাশি একক সঙ্গীতজীবনে অর্ণবের ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৫ সালে তার প্রথম একক স্টডিও অ্যালবাম চাইনা ভাবিস প্রকাশিত হয়। তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম হোক কলরব প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে।

শান্তিনিকেতনে থাকার সময় নিজে ও বন্ধুদের নিয়ে তিনি যেই গানগুলি করেছিলেন সেগুলোই এই অ্যালবামে স্থান পেয়েছে। তার তৃতীয় অ্যালবাম “ডুব”। কাব্যিক ভাষায় গানের কথা ও জটিল সুরমুর্ছনার সুবাদে অর্ণব বাংলাদেশী শ্রোতাদের কাছে অনেক জনপ্রিয়।

তার চতুর্থ অ্যালবাম “রোদ বলেছে হবে” । এটাই সম্ভবত তার অ্যালবাম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষামুলক অ্যালবাম। তার পঞ্চম অ্যালবাম আধেক ঘুমে, যেটি একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতধর্মী অ্যালবাম। তার সর্বশেষ অ্যালবাম খুব ডুব, যেটি ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়।

এছাড়া সাহানা বাজপেয়ীর রবীন্দ্রসঙ্গীত অ্যালবাম “নতুন করে পাবো বলে” এবং কৃষ্ণকলির অ্যালবাম “সূর্যে বাঁধি বাসা”-তেও তিনি সুরারোপ করেছেন।

 

শায়ান চৌধুরী অর্ণব । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক

 

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে শায়ান চৌধুরী অর্ণব ভারতীয়-বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী সাহানা বাজপেয়ীকে বিয়ে করেন ২০০১ সালে। তারা একসাথে পড়াশোনা করেছেন শান্তিনিকেতনের পাঠ ভবনে। তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে বিবাহের ৭ বছর পর ২০০৮ সালে।এরপর ২০২০ সালের অক্টোবর ২৮ তারিখে ২য় বিয়ে করেন আসামে জন্ম নেওয়া এবং আসানসোলে বেড়েউঠা সুনিধি নায়েককে।

সঙ্গীত পরিচালনা

  • জাগো (২০১০)
  • মনপুরা (২০০৯)
  • আয়নাবাজি (২০১৬)
  • নোনাজলের কাব্য (২০২০)

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment