বিমলচন্দ্র ঘোষ একজন বাঙালি বামপন্থী কবি ছিলেন।
Table of Contents
জন্ম
বিমলচন্দ্র ঘোষ ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের কলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল নগেন্দ্রনাথ ঘোষ। তাদের পৈতৃক বাড়ি ছিল হাওড়ার বালি শহরে।
শিক্ষা ও কর্মজীবন
১৯১৬ থেকে ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি চক্রবেড়িয়া ইন্সটিটিউশনের ছাত্র ছিলেন। পিতার অসুস্থতার কারণে তাকে স্কুল ছাড়তে হয়। পরে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মপুকুর ইন্সটিটিউটশন থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন, তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তাকে কলেজ ছাড়তে হয়। পরে আশুতোষ কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও তিনি তা সম্পূর্ণ করতে পারেননি। সংসারের আর্থিক দুরবস্থার কারণে তাকে কলেজ ছাড়তে হয়। বাধ্য হয়ে ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে কেরানির চাকরি গ্রহণ করেন। একাদিক্রমে ১৭ বছর চাকরি করার পর তিনি সেই কাজে ইস্তফা দেন। ছাত্রাবস্থা এবং যৌবনেই তিনি রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে স্বদেশী মন্ত্রে দীক্ষিত হন। পরবর্তীকালে তিনি মারাঠি শ্রমিক নেতা কার্ডিলে ও বামপন্থী রাজনীতিবিদ মুজফফর আহমেদের সংস্পর্শে এসে বামপন্থায় আকৃষ্ট হন।
কবিতা ও গান
বিমলচন্দ্র ঘোষের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হল জীবন ও রাত্রি, দক্ষিণায়ন, উলুখড়, দ্বিপ্রহর ও অন্যান্য কবিতা, ফতোয়া, নানকিং, সাবিত্রী, বিশ্বশান্তি, ভুখা ভারত, উদাত্ত ভারত, রক্তগোলাপ প্রভৃতি। নানকিং কাব্যগ্রন্থ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। গীতিকার হিসাবেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী ও সফল। তার লেখা উজ্জ্বল একঝাঁক পায়রা, শোনো বন্ধু শোনো- প্রাণহীন এই শহরের ইতিকথা, ঝড় উঠেছে বাউল বাতাস প্রভৃতি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
আর উদাত্ত ভারত গ্রন্থটি কবি বিমলচন্দ্র কর্তৃক নির্বাচিত তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতা সংকলন। কবিতা সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে তিনি কিছুকাল সাহিত্য পত্রিকা ‘বারো মাস’ এবং ‘এষা’ প্রকাশ ও সম্পাদনা করেছেন।
সম্মাননা
১৯৬০ সালে তাঁর পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রখ্যাত সাংবাদিক বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে মহাবোধি সোসাইটি হলে বিমলচন্দ্রকে এক গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। কবি প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৬৮ সালে বিমলচন্দ্র ঘোষ ‘সোভিয়েটল্যান্ড’ পুরস্কার লাভ করেন।
মৃত্যু
১৯৮১ সালের ২২ অক্টোবর জীবনাবসান হয় তাঁর।
আরও দেখুনঃ
1 thought on “বিমলচন্দ্র ঘোষ । বাঙালি বামপন্থী কবি”