ফণী বড়ুয়া । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ

ফণী বড়ুয়া ছিলেন একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ। তিনি ছিলেন লোকসংস্কৃতি ও আধুনিক কবিগানের স্রষ্টা। সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০০ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক এ ভূষিত করে।

ফণী বড়ুয়া । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ

জীবনী

ফণী বড়ুয়া ১৯১৫ সালে (১৭ শ্রাবণ, ১৩২২ বঙ্গাব্দ) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রামের রাউজানের পাঁচখাইন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নন্দকুমার বড়ুয়া এবং মাতা শ্যামা বড়ুয়া। তিনি তার পিতামাতার তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। তার শৈশবেই তিনি তার মাকে হারান। গ্রামের বিদ্যালয়ে তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন।

নিজের ভরণপোষণের জন্য তিনি শ্রমণ জীবন বেঁচে নেন, কিন্তু কিছুদিন পর তিনি এই জীবন ছেড়ে বার্মা চলে যান। সেখানে তিনি ট্রাংকে রং লাগানো, ফুলতোলা অর্থাৎ রং মিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। রেঙ্গুনে তিনি মতিলাল বড়ুয়ার কবিগান শুনে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তিন বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং জীবিকার জন্য বৌদ্ধ কীর্তন গাওয়া ও রং লাগানো কাজ করতেন। তার রং লাগানোর দোকানে তিনি টর্চ মেরামত, ঘড়ি সারানোর কাজ, ঝালাইসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতেন।

ফণী বড়ুয়া । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ

স্মারক ও শ্রদ্ধাঞ্জলি

২০০১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত কবিয়াল ফণী বড়ুয়া নাগরিক স্মরণসভা কমিটি, চট্টগ্রাম-এর “স্মরণিক” স্মরণপত্রে কল্পতরু সেনগুপ্ত রচিত “দেশব্রতী কবিয়াল ফণী বড়ুয়া স্মরণে” নিবন্ধ, সুচরিত চৌধুরী রচিত “কুসুম বালিকা” স্মৃতিনিবন্ধ, আবুল মোমেন রচিত “বর্ষীয়ান কবিগায়ককে শ্রদ্ধাঞ্জলি” নিবন্ধ, মৃণাল চৌধুরী রচিত “কবিয়াল ফণী বড়ুয়া এবং লোকসংস্কৃতির শ্রেণি সচেতনতা” নিবন্ধ, বাদল বরণ বড়ুয়া রচিত “কবিয়াল ফণী বড়ুয়া: সংক্ষিপ্ত জীবনকথা ও তাঁর কবিগানের বিষয় সমীক্ষা” নিবন্ধ এবং শিমুল বড়ুয়া রচিত “যিনি ছিলেন মাটি ও মানুষের কাছাকাছি” নিবন্ধে কবিগানে ফণী বড়ুয়ার অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।[৩] এছাড়া তার স্মরণে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামে শিমুল বড়ুয়া সম্পাদিত কবিয়াল ফণী বড়ুয়া স্মারকগ্রন্থ-এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

কবিয়াল ফণী বড়ুয়া রচিত চারখানা গানের বই প্রকাশ হয়েছে।

(ক) হাল জামানার গান।

(খ)দেশের ডাক।

(গ) জনতার গান।

(ঘ) সর্বহারার জীবন সঙ্গীত।

ফণী বড়ুয়া । বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ

পরলোক গমন

উপমহাদেশের খ্যাতনামা কবিয়াল ফণী বড়ুয়া আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২২শে জুন, শুক্রবার ২০০১ তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরলোক গমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

সম্মাননা

২০০১: সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশে পদক

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment