ফকির আলমগীর । বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী

ফকির আলমগীর ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী। গণসঙ্গীত ও দেশীয় পপ সঙ্গীতে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে। তিনি ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৯ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশে পদকে ভূষিত হন।

ফকির আলমগীর । বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী

জন্ম ও কৈশোর

ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোঃ হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেছা। ফকির আলমগীর কালামৃধা গোবিন্দ হাই স্কুল থেকে ১৯৬৬ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন।

শিক্ষা ও কর্মজীবন

জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন। ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন) সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সঙ্গীত বলয়ে প্রবেশ করেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী একজন শব্দ সৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।

ফকির আলমগীর । বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলা পপ গানের বিকাশেও তার রয়েছে বিশেষ অবদান। বিশেষ করে তার দরাজ কণ্ঠে ‘ও সখিনা’, ‘চল সখিনা দুবাই যাব, ‘মন আমার দেহ ঘড়ি’, ‘আহারে কাল্লু মাতব্বর’, ‘ও জুলেখা’, ‘সান্তাহার জংশনে দেখা’, ‘বনমালী তুমি’ এমন আরও অসংখ্য গান গেয়ে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

বই

আলমগীর একজন লেখকও ছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সালে তার প্রথম বই চেনা চায়না প্রকাশ করেন। তার পরবর্তী দু’টি বইয়ের নাম ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজয়ের গান এবং গণ সংগীতের অতীত ও বর্তমান। ২০১৩ সালে তিনি ৩টি বই প্রকাশ করেন – অমর কথা, যারা আছে হৃদয় পটে এবং স্মৃতি আলাপনে মুক্তিযুদ্ধ। তিনি মোট নয়টি বই রচনা করেছেন।

পুরস্কার

সঙ্গীতাঙ্গনে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে একুশে পদক পান ফকির আলমগীর। এছাড়া শেরেবাংলা পদক, ভাসানী পদক, জসীমউদ্‌দীন স্বর্ণপদকও অর্জন করেছেন এই গুণী শিল্পী।

ফকির আলমগীর । বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী

মৃত্যু

২৩ জুলাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দে ৭১ বছর বয়সে ফকির আলমগীর মৃত্যু বরণ করেন। ১৪ জুলাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দে তার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পরে। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকলে পরদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফুসফুস সংক্রমণের পাশাপাশি রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ২৩ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment