পঙ্কজ কুমার মল্লিক | বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও অভিনেতা

পঙ্কজ মল্লিক বা পঙ্কজ কুমার মল্লিক ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক ও অভিনেতা। তিনি বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের এক অগ্রণী সঙ্গীত পরিচালক ও নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ছিলেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতেও তার সবিশেষ অবদান ছিল। পঙ্কজ মল্লিকের জন্ম ১০ মে, ১৯০৫, মৃত্যু ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮। ১৯৭০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত করে।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক পঙ্কজ কুমার মল্লিক | বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও অভিনেতা

 

বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী ,সঙ্গীত পরিচালক ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিক ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম।পঙ্কজ মল্লিক নামে সমধিক পরিচিত এই ব্যক্তিত্ব জীবনের শুরুটা মার্গ সঙ্গীত দিয়ে করলেও শেষটা তা কাব্যসঙ্গীতে রূপলাভ করে । তিনি ছিলেন হিন্দি ও বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের এক অগ্রণী সঙ্গীত পরিচালক ও নেপথ্য কন্ঠশিল্পী। রবীন্দ্রসংগীতের ক্ষেত্রেও তিনি সুবিশেষ এক অবদান রেখে গেছেন।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক, পঙ্কজ মল্লিক | Pankaj Kumar Mallick, Pankaj Mullick
পঙ্কজ কুমার মল্লিক, পঙ্কজ মল্লিক | Pankaj Kumar Mallick, Pankaj Mullick

পঙ্কজ মল্লিকের জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:

১০ মে, ১৯০৫ সালে কলকাতার মানিকতলার কাছে চালতা বাগানে এক বৈষ্ণব পরিবারে পঙ্কজ কুমার মল্লিকের জন্ম হয়। পিতা, মণিমোহন মল্লিক ও মাতা মনোমোহিনী দেবী উভয়ই ছিলেন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। তাই তাদের বাড়িতে মাঝেমধ্যেই বসতো নামকরা ধর্মীয় সঙ্গীতশিল্পীদের আসর।তাই বাল্যকাল থেকেই পঙ্কজ মল্লিক ধর্মভিত্তিক মার্গসংগীত বা টপ্পা জাতীয় গান শিখতেন এবং সেগুলি গাইবার প্রবণতা ও জন্মেছিল। পিতা মণিমোহনের ছিল সঙ্গীতের প্রতি এক গভীর আগ্রহ ।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক, পঙ্কজ মল্লিক | Pankaj Kumar Mallick, Pankaj Mullick

পঙ্কজ কুমার দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিয়েছিলেন। স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে তিনি অধ্যয়ন সমাপ্ত করেছিলেন । পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র দ্বিপেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে তাঁর আলাপ হলে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। সুমিষ্ট কণ্ঠের অধিকারী পঙ্কজ মল্লিক একসময় নিজের কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত ধারণ করেছিলেন যা তাঁর পরবর্তী জীবনে প্রধান সম্পদ হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি তাঁর অসাধারণ প্রতিভা বলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরম স্নেহের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই পঙ্কজ কুমার রবীন্দ্রসঙ্গীতের এক অগ্রণী শিল্পীর সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বঙ্গবাসী কলেজে ছাত্র থাকাকালীন তিনি অনেক রবীন্দ্রসংগীত শুদ্ধভাবে আয়ত্ত করেছিলেন।অর্থের লোভ এড়িয়ে কেবলমাত্র গানের তাড়নায় ছুটতে গিয়ে পঙ্কজ কুমার মল্লিকের স্নাতক অর্জন করা হয়ে ওঠেনি।

কর্মজীবন

রবীন্দ্রসঙ্গীত

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ১৯২৬ সালে মাত্র একুশ বছর বয়সে “নেমেছে আজ প্রথম বাদল” গানটি ভিয়েলোফোন কোম্পানি থেকে রেকর্ড করেছিলেন।১৯২৭ সালের ২৬ শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যাতেই তিনি জীবনের প্রথম বেতারে গাইলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুটি গান -‘এমনও দিনে তারে বলা যায় /এমন ঘনঘোর বরিষায়’ এবং ‘একদা তুমি প্রিয়ে আমারি এ তরুমূলে/ বসেছ ফুলসাজে সে কথা যে গেছ ভুলে’। বলা যেতে পারে যে সেই মুহূর্তটি থেকেই সঙ্গীতকে জীবিকা রূপে গ্রহণ করে জীবনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছিলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক। ১৯৩২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, ‘প্রলয়নাচন নাচলে যখন ‘ও ‘তোমার আসন শূন্য আজি” ছিল তাঁর জীবনে প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক, পঙ্কজ মল্লিক | Pankaj Kumar Mallick, Pankaj Mullick

রবীন্দ্রসঙ্গীতকে তিনি আত্মার আত্মীয় মনে করতেন এবং সেটিকে জনপ্রিয় এবং সুদূর প্রসারিত করে তোলার কাজেও তিনি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন আর তারই ফলশ্রুতি হিসেবে তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘খেয়া’ কাব্যগ্রন্থের, “শেষ খেয়া” কবিতাটিতে সুর সংযোজন করেন এবং কণ্ঠদান করেছিলেন। গানটি ছিল ‘দিনের শেষে ঘুমের দেশে’ যেটি আজও সমানভাবে জনপ্রিয় প্রত্যেকটি বাঙালি শ্রোতাদের মধ্যে।। ১৯৩৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ,’মুক্তি’ চলচ্চিত্রের জন্য রবীন্দ্রনাথের অনুমতিক্রমে পঙ্কজকুমার মল্লিক এই গানে সুরারোপ করেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ কর্তৃক সুরারোপিত ছিল না বলে বিশ্বভারতী সংগীত সমিতি এটিকে ‘রবীন্দ্রসংগীত’ হিসেবে আখ্যা দেয়নি এবং রবীন্দ্রনাথের গীতি-সংকলন গীতবিতান-এও এই গানটি স্থান পায়নি। তবে পঙ্কজ কুমার মল্লিকের পরবর্তীকালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও কিশোর কুমার এই গানটি রেকর্ড করেছিলেন এবং গানটি ততোধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ‘মুক্তি’ চলচ্চিত্রে পঙ্কজকুমার মল্লিক রবীন্দ্রনাথের লেখা”আজ সবার রঙে রঙ মেশাতে হবে”, “তার বিদায়বেলার মালাখানি” ও “আমি কান পেতে রই” গান তিনটিও ব্যবহার করেছিলেন বলে শোনা যায় ।

আকাশবাণীতে সঙ্গীতশিল্পী:

১৯২৭ সাল থেকে পঙ্কজ মল্লিক কলকাতার ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের সাথে যুক্ত হন এবং সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। এই সংস্থাটি পরে অল ইন্ডিয়া রেডিও (এআইআর) এবং বর্তমানে আকাশবাণী কলকাতা নামে সুপরিচিত । এখানে তিনি রাইচাঁদ বড়াল কে তাঁর সহকর্মী হিসেবে পেয়েছিলেন এবং প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে পঙ্কজ কুমার মল্লিক আকাশবাণীতে সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করে গেছেন।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক, পঙ্কজ মল্লিক | Pankaj Kumar Mallick, Pankaj Mullick

১৯২৯ সালের শেষের ভাগে পঙ্কজ মল্লিক কলকাতা বেতারে ,’সঙ্গীত শিক্ষার আসর’ নামে একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে শুরু করেন। তাঁর সুরারোপিত প্রথম গানটির গীতিকার ছিলেন অলক গঙ্গোপাধ্যায়। আর দ্বিতীয় গানটি ছিল কাজী নজরুল ইসলামের সাড়া জাগানো নজরুলগীতি ,”মোর ঘুম ঘোরে এলে মনোহর/নমো নম, নমো নম, নমো নম।’ সেই আসরে নজরুলগীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত,অতুল প্রসাদ, রজনীকান্ত এবং দ্বিজেন্দ্রগীতি র শিক্ষা দেয়া হতো । এগুলো ছাড়াও তাঁর শিক্ষার সহস্রাধিক গানের তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল পদকীর্তন, শ্যামাসঙ্গীত, পল্লীসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, আনুষ্ঠানিক গান, তুলসীদাস, সুর দাস, গুরুনানক, মীরাবাঈ প্রমুখের বিখ্যাত সব হিন্দি ভজন।

১৯৩১ সাল থেকে শুরু করে সুদীর্ঘ ৩৮ বছর বাংলা, হিন্দি, উর্দু ও তামিল চলচ্চিত্রে পঙ্কজকুমার মল্লিক এক বিশাল অবদান রেখে গিয়েছিলেন। খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী এবং সঙ্গীত পরিচালক কুন্দন লাল সায়গল, শচীন দেব বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, আশা ভোঁসলে প্রমুখদের সঙ্গে ও তিনি সমদক্ষতায় কাজ করেছিলেন ।

অভিনয় জগতে:

অভিনয় জগতেও তিনি সমান পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। চলচ্চিত্রে তিনি কুন্দন লাল সায়গল, প্রমথেশ বড়ুয়া ও কানন দেবীর মতো প্রতিথযশা শিল্পীদের সাথে অভিনয়ও করেছিলেন। নীতীন বসু ও রাইচাঁদ বড়ালের সাথে মিলে পঙ্কজ মল্লিক ভারতীয় চলচ্চিত্রে নেপথ্য কণ্ঠসংগীতের প্রবর্তন করেছিলেন। ভারতের প্রথম যুগের ঐতিহ্যবাহী ফিল্ম স্টুডিও নিউ থিয়েটার্সের সঙ্গে তিনি ২৫ বছর যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৩১ সালে সাড়া জাগানো মহিষাসুরমর্দিনীর অনুষ্ঠানটিতে সুরারোপিত করেছিলেন ।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক, পঙ্কজ মল্লিক | Pankaj Kumar Mallick, Pankaj Mullick

পুরস্কার ও সম্মাননা:

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ১৯৭০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন এবং ১৯৭২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে ‘দাদাসাহেব ফালকে‘ পুরস্কারে সম্মানিত করে থাকেন।

এছাড়াও পঙ্কজকুমার মল্লিক সঙ্গীত জগতে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় সম্মানিত হয়েছিলেন। ভারতীয় ডাকবিভাগ পঙ্কজ মল্লিকের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনকে উপলক্ষ্য করে এবং তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে ২০০৬ সালে এক স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে ।

ভারতের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন চ্যানেল দূরদর্শনও একই বছরের ১০ ই মে এই বিশেষ দিনটি উপলক্ষ্যে এক বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রচার করে।

১৯৫৯ বিশিষ্ট চলচ্চিত্রাভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী বৈজয়ন্তীমালা’র মতন শীর্ষতারকাদের সাথে পঙ্কজ মল্লিকের অনুষ্ঠান সারা দেশব্যাপী দূরদর্শনে প্রচারিত হয়ে থাকে। তাছাড়াও ২০০৫ সালে এই প্রতিথযশা সঙ্গীতশিল্পীর ১০০তম জন্মশতবর্ষে কলকাতায় তাঁর বাসভূমিতে ,’পঙ্কজ মল্লিক সংগীত ও আর্ট ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠিত করা হয়ে থাকে।

শেষ জীবন এবং মৃত্যু:

১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সংগীত শিক্ষার আসরে শেখানো তাঁর শেষ দুটি গানও ছিল রবীন্দ্রসংগীত ।একটি হল – ‘শেষ গানেরই রেশ নিয়ে যাও চলে শেষ কথাটি যাও বলে’ । শেষ গানটি ছিল –

‘তোমার শেষের গানের রেশ নিয়ে কানে চলে এসেছি /কেউ কি তা জানে’
” তখনো তো কতই আনাগোনা,
নতুন লোকের নতুন চেনাশোনা–
ফিরে ফিরে ফিরে-আসার আশা দ’লে এসেছি কেউ কি তা জানে॥”

গানের শেষ কথাগুলি যে পঙ্কজ মল্লিকের জীবনের কথা তা জানা গিয়েছিল কলকাতার বেতারকেন্দ্রের তদানীন্তন স্টেশন ডিরেক্টর ডি.কে. সেনগুপ্ত থেকে প্রাপ্ত ৩রা অক্টোবরের একটি পত্র মারফত। সেই পত্র থেকে জানা যায় যে সংগীত শিক্ষার আসর পরিচালনা থেকে পঙ্কজ কুমার মল্লিককে অব্যাহিত দেওয়া হয়েছিল ।

তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে আসরটির সব থেকে বড় অবদান ছিল বিশুদ্ধ রবীন্দ্রসংগীতের ব্যাপক প্রচারে সফলতা অর্জন করা।জনপ্রিয় সঙ্গীত শিক্ষার আসরটি তাঁর হাত থেকে কেড়ে নেওয়ার কয়েক মাস পরেই তাঁর চুয়াল্লিশ বছরের সর্বাধিক জনপ্রিয় মহিষাসুর মর্দিনী অনুষ্ঠানটিও তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এই বহুল জনপ্রিয় দুটি অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়ার বিপক্ষে এবং পুনরায় চালু করার দাবিতে কলকাতার রাস্তায় মিছিল নেমেছিল।মহিষাসুর মর্দিনী অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শোক পঙ্কজকুমার মল্লিক নিতে পারেননি তাই অনুষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার পরের দিনই তিনি আক্রান্ত হন হৃদরোগে।

মৃত্যুর কিছু মাস আগে পঙ্কজ মল্লিক তাঁর স্মৃতিকথা শেষ করেছিলেন আর সেখান থেকে জানা যায় যে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুকে তিনি তাঁর সুরাশ্রিত কবিগুরুর দুটি রচনা, ‘ভগবান তুমি যুগে যুগে দূত’ এবং ‘রুদ্র তোমার দারুণ তৃপ্তি এসেছে দুয়ার ভেদিয়া’ নিজ কণ্ঠে গেয়ে সেটিকে রেকর্ড করে বঙ্গবন্ধুকে উপহার করেছিলেন। বাংলাদেশ সফরের মাত্র চার বছর পরে ১৯৭৮ সালের ১৯ শে ফেব্রুয়ারি কলকাতায় এই কিংবদন্তি শিল্পীর মৃত্যু হয়।

ভারতীয় সঙ্গীত ইতিহাসে পঙ্কজকুমার মল্লিক একটি অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। বাঙলা ছায়াছবি যাঁর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ,রবীন্দ্রসঙ্গীত যাঁর প্রেরণায় জনপ্রিয়তার শিখরে উঠেছিল সেই কিংবদন্তি শিল্পীর কাছে আমরা চির ঋণী পরিশেষে বলা যেতে পারে যে আধুনিক ভারতীয় সংগীতের ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়েছে এই মহান ব্যক্তিত্বের হাত ধরেই।

পঙ্কজকুমার মল্লিকের গাওয়া কিছু গান:

পঙ্কজকুমার মল্লিক সম্পর্কে প্রশ্নোত্তর:

পঙ্কজকুমার মল্লিক কে ছিলেন?

বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী ,সঙ্গীত পরিচালক ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিক ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম।

পঙ্কজ কুমার মল্লিকের জন্ম কত সালে ও কোথায় হয় ?

১০ ই মে, ১৯০৫ সালে কলকাতার মানিকতলার কাছে চালতা বাগানে এক বৈষ্ণব পরিবারে পঙ্কজ কুমার মল্লিকের জন্ম হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন বিখ্যাত গানটি পঙ্কজকুমার মল্লিক সুরারোপিত করেছিলেন?
“দিনের শেষে ঘুমের দেশে”

পঙ্কজ কুমার মল্লিক তাঁর কৃতিত্বের জন্য ভারতীয় কোন দুটি বিশেষ সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন?

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ১৯৭০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন এবং ১৯৭২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কারে সম্মানিত করে থাকেন।

পঙ্কজ কুমার মল্লিকের কবে মৃত্যু হয় ?

১৯৭৮ সালের ১৯ শে ফেব্রুয়ারি কলকাতায় এই কিংবদন্তি শিল্পীর মৃত্যু হয়।

আরও দেখুন: