আলী হোসেন একজন বাংলাদেশী সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। পাঁচ দশকের কর্মজীবনে তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুর ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন। তার সুরারোপিত উল্লেখযোগ্য গান হল “হলুদ বাটো মেন্দি বাটো”, “অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান”, “আরে ও প্রাণের রাজা” ও “কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো”। তিনি ব্যাথার দান চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার জন্য শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
Table of Contents
প্রারম্ভিক জীবন
আলী হোসেন ১৯৪০ সালের ২৩শে মার্চ তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার চাকরির কারণে তিনি পাকিস্তানের করাচিতে পড়াশোনা করেন। সেখানে নজরুল একাডেমিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। এই একাডেমিতে চাকরির সুবাদে তিনি সেখানকার জনপ্রিয় সঙ্গীতের শিক্ষক পিয়ার খানের নিকট গানের তালিম নিয়েছেন।
কর্মজীবন
মুস্তাফিজ পরিচালিত ডাক বাবু (১৯৬৬) চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সুরকার হিসেবে আলী হোসেনের চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। এই চলচ্চিত্রে শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া “হলুদ বাটো মেন্দি বাটো” এবং সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া “চাতুরী জানে না মোর বধূয়া” গান দুটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
১৯৬০-এর দশকে তিনি ঢাকা থেকে উর্দু ভাষায় নির্মিত ছোট সাহেব (১৯৬৭), কুলি (১৯৬৮), দাগ (১৯৬৯), ও আনাড়ি (১৯৬৯) চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেন। ১৯৬৯ সালে নতুন নামে ডাকো ও অবাঞ্ছিত চলচ্চিত্রের সুরারোপ করেন। নতুন নামে ডাকো চলচ্চিত্রের “কে তুমি এলে গো আমার এ জীবনে” গানটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
১৯৭০-এর দশকে তার সুরারোপিত অশ্রু দিয়ে লেখা (১৯৭২) চলচ্চিত্রের “অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান” এবং বাদশা (১৯৭৫) চলচ্চিত্রের “আরে ও প্রাণের রাজা” গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি ১৯৮৯ সালে কামাল আহমেদ পরিচালিত ব্যথার দান চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার জন্য শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
ব্যক্তিগত জীবন ও মৃত্যু
আলী হোসেনের স্ত্রী সালেহা খাতুন। এই দম্পতির একমাত্র পুত্র আসিফ হোসেন। আলী হোসেন ২০২১ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি ৮১ বছর বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বস্টনের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
পুরস্কার
১৯৮৯: শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার – ব্যাথার দান।
আরও দেখুনঃ