হিন্দুস্থানী সঙ্গীতে ঠাট। ঠাট হচ্ছে হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এক ধরনের গাণিতিক প্রকাশ যা মূলতঃ রাগ সঙ্গীতকে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। ঠাট এক বিশেষ শ্রেণীর স্বর সমগ্র। প্রতিটি ঠাটই ভিন্ন ভিন্ন শুদ্ধ ও বিকৃত সুরের সমন্বয়ে গঠিত। একটি সপ্তকের ১২টি ঘরের মধ্যে ৭টি করে স্বর নিয়ে এক-একটি ঠাট গঠিত হয়েছে।

হিন্দুস্থানী সঙ্গীতে ঠাট
ঠাটের নিম্নলিখিত বিশিষ্টগুলি উল্লেখযোগ্য:
- ঠাটের স্বর-সংখ্যা হবে সাতটি।
- সাতটি স্বরই হবে ক্রমানুসারে, যেমন—সা রে গ ম প ধ নি।
- ঠাটে কেবলমাত্র আরোহ হয়।
- একই ঠাটে শুদ্ধ ও বিকৃত স্বর পাশাপাশি ব্যবহৃত হয় না।
- ঠাট রচনায় রঞ্জকতা না থাকলেও চলে।
- ঠাট গাওয়া যায় না।
- একটি ঠাটের অধীনে অনেকগুলো রাগ থাকে।
অপর দিকে এই সাতটি শুদ্ধ স্বর এর মধ্যে ৫টি স্বর এর বিকৃত রূপ রয়েছে:
- র → ঋ (কোমল রে)
- গ → জ্ঞ (কোমল গা)
- ম → হ্ম (তীব্র/কড়ি মা)
- ধ → দ (কোমল ধা)
- ন → ণ (কোমল নি)
পণ্ডিত বিষ্ণুনারায়ণ ভাতখণ্ডে (১৮৬০-১৯৩৬) বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ভারতীয় উচ্চাঙ্গ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগ সমূহকে দশটি ঠাট বা শ্রেণীতে বিন্যস্ত করেছেন । মোটামুটিভাবে এই শ্রেণী বিভাজনই সর্বজন গৃহীত। এই রাগ-রাগিনী নিম্নলিখিত ১০টি মুখ্য ঠাটের উপরেই বিভাজিত।
বিলাবল – স র গ ম প ধ ন
খাম্বাজ – স র গ ম প ধ ণ
কাফী – স র জ্ঞ ম প ধ ণ
আশাবরী – স র জ্ঞ ম প দ ণ
ভৈরবী – স ঋ জ্ঞ ম প দ ণ
ভৈরব – স ঋ গ ম প দ ন
কল্যাণ – স র গ হ্ম প ধ ন
মারওয়া – স ঋ গ হ্ম প ধ ন
পূর্বী – স ঋ গ হ্ম প দ ন
তোড়ী – স ঋ জ্ঞ হ্ম প দ ন
জনক ঠাট কাকে বলে?
সকল ঠাট থেকেই রাগ উৎপন্ন হতে পারে না। মুষ্টিমেয় কয়েকটি মাত্র ঠাট থেকে রাগ উৎপন্ন হয় এবং রাগ উৎপাদক সেই বিশেষ ঠাটগুলিকে বলা হয় জনক ঠাট। হিন্দুস্তানি সংগীতে প্রচলিত ১০টি ঠাটকেই জনক বলা চলে।
বিস্তারিত দেখুন:
- বিলাবল ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- খাম্বাজ ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- ভৈরব ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- পূর্বী ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- মারোয়া ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- কাফী ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- কল্যাণ । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- ভৈরবী ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- আশাবরী ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
- তোড়ী ঠাট । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
আরও পড়ুন:
3 thoughts on “হিন্দুস্থানী সঙ্গীতে ঠাট । ধারণা । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত”