সতীনাথ মুখোপাধ্যায় একজন খ্যাতিমান বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। তিনি আধুনিক বাংলা গান, নজরুল সংগীত ও গজল শিল্পী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যার কণ্ঠে বেদনা-মধুর গান বাঙালি শ্রোতাদের মন কেড়েছে।
Table of Contents
সতীনাথ মুখোপাধ্যায় । বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক
প্রথম জীবন
সতীনাথ মুখোপাধ্যায় ১৯২৩ সালে ভারতের লখনউতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা তারকদাস মুখোপাধ্যায়। পিতার চাকরিসূত্রে লক্ষ্ণৌতে জন্ম হলেও ছোটবেলাতেই সতীনাথ চলে আসেন হুগলির চুঁচুড়ায়। এখানেই তার বেড়ে ওঠা ও বিএ পর্যন্ত লেখাপড়া সম্পন্ন করেন। এরপর এমএ পড়ার জন্য কলকাতা আসেন।
সংগীত চর্চা
ছোটবেলা থেকেই সতীনাথ সংগীতানুরাগী ছিলেন ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, ধ্রুপদ-ধামার-টপ্পা শেখেন। তার ঠাকুরদা রামচন্দ্র বেহালা বাজাতেন ও বাবা তারকদাস গান গাইতেন। তবে কেউ পেশাদারি ছিলেন না। কলকাতায় এসে পড়া বাদ দিয়ে সতীনাথ চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত চর্চা করেন। কর্মজীবনে যোগদান করেন কলকাতার অ্যাকাউন্টেন্স জেনারেল (এজি বেঙ্গল) এ।
গানের কোনো লাইন যখনই মনে আসতো তখনই লিখে ফেলতেন। গান মনে এল তো, সিগারেটের প্যাকেট ছিঁড়ে তাতেই কথা লিখেছেন। নোটেশন করেছেন। চাঁদনি রাতে গাড়িতে যেতে যেতে হঠাৎই লিখে ফেলছেন, ‘জীবনে যদি দীপ জ্বালাতে নাহি পারো’ কিংবা ‘এখনও আকাশে চাঁদ ওই জেগে আছে’।

নজরুলগীতিরও তিনি জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন। ‘রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’ সম্ভবত তার কণ্ঠেই প্রথম রেকর্ড হয়েছিল। ১৯৪২ সালে সতীনাথ প্রথম রেকর্ড করলেন নজরুলগীতির। ‘ভুল করে যদি ভাল বেসে থাকি’। তুমুল সাড়া পড়ে গেল। কিন্তু পরের গানের রেকর্ড ‘আমি চলে গেলে পাষাণের বুকে লিখো না আমার নাম’ আর ‘এ জীবনে যেন আজ কিছু ভাল লাগে না’ যখন বেরোল, তত দিনে পেরিয়ে গেছে দশটি বছর।
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৬৮ সালে সতীনাথ সংগীত শিল্পী উৎপলা সেন এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিখ্যাত গান সমুহ
১। আকাশ এত মেঘলা, ২। জীবনে যদি দ্বীপ, ৩। মরমীয়া তুমি, ৪। পাষানের বুকে, ৫। ও আকাশ প্রদীপ, ৬। জানি একদিন, ৭। তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি, ৮। কত না হাজার ফুল, ৯। হায় বরষা, ১০। এখনো আকাশ, ১১। বন্ধু হয় অনেকে ইত্যাদি।
মৃত্যু
১৯৯২ সালের ১৩ ডিসেম্বর সতীনাথ মুখোপাধ্যায় কলকাতায় পিজি হাসপাতালে বক্ষ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
আরও দেখুনঃ