বীরেশ্বর সরকার বা বি সরকার ছিলেন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র প্রযোজক, গীতিকার ও সুরকার। মাত্র তিনটি বাংলা চলচ্চিত্র প্রযোজনার ও হাতে গোনা কয়েকটি গানের জন্য বাংলা ছায়াছবির জগতে স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি।
প্রাথমিক জীবন
বীরেশ্বর সরকার বৃটিশ ভারতে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন। পারিবারিক ব্যবসা কলকাতা শহরে সোনা-জহরতের। কিন্তু সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগ আর চলচ্চিত্রের প্রতি ছিল অগাধ ভালোবাসা। তবে তার মধ্যে ছিল বড় একগুঁয়েমি ভাব। তিনি নিজের প্রযোজিত ছবি ছাড়া অন্য কারো ছবিতে কাজ করবেন না। আর হাজার অনুরোধ সত্বেও কাজ করেন নিও।

কর্মজীবন
বীরেশ্বর সরকারের সোনা দোকানের উপরে থাকতেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। তার সঙ্গে বীরেশ্বরের গভীর বন্ধুত্ব ছিল। তার অনুরোধেও তিনি অন্যের ছবিতে সুর না দেওয়ার প্রতিজ্ঞা থেকে সরে আসেন নি। দ্বিজেন ছাড়াও সুরকার সুধীন দাশগুপ্ত ও রতু মুখোপাধ্যায়ের সাথেও ছিল তার দারুন বন্ধুত্ব। বীরেশ্বরের এক গুয়েমির কারণে তার বেশি অবদান তেমন নেই বললেই চলে। তবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোর কুমার, লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, প্রমুখ স্বনামধন্য গায়ক গায়িকা তার সুরে কণ্ঠ দিয়েছেন। আর তাতেই সৃষ্টি হয়েছিল ‘কে জানে ক’ ঘণ্টা’, ‘বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি এ কোন অপরূপ সৃষ্টি’, ‘আমার নাম এন্টনি’, ‘হতাম যদি তোতাপাখি’, ‘আহা কি দারুণ দেখতে’, বা ‘এক যে ছিল রাজকন্যে’ মতো কালজয়ী গান, যা আজো সমানভাবে জনপ্রিয়। ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য রচনাও তিনিই করতেন।
যে তিনটি ছবি তিনি প্রযোজনা করেন সেগুলি হল –
সোনার খাঁচা (১৯৭৩),
মাদার (১৯৭৯) এবং
রাজনর্তকী (১৯৯১)
নিম্নের চলচ্চিত্র অনুযায়ী সমস্ত গানগুলির সুরকার ছিলেন তিনি –
- শুধু ভালবাসা দিয়ে
- যা উড়ে যা
- কে জানে ক ঘণ্টা
- যা যা ভুলে যা
- বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি
- ওরে আমার মন
- হতাম যদি তোতাপাখি
- এই বৃষ্টিতে ভিজে মাঠে
- হাজার তারার আলোয়
- আমার নাম এন্টনি
- এক যে ছিল রাজপুত্তুর
- আহা কী দারুণ দেখতে
- আমার তুমি আছো
- এসো হে সুন্দর
- আমি আর স্বপ্ন দেখব না
- হরি হরি হরি হরি বোল
- সেই যদি স্বপনে এলে
- হরি বোল
জীবনাবসান
প্রতিভাবান সুরকার বীরেশ্বর সরকার ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন।
আরও দেখুনঃ
3 thoughts on “বীরেশ্বর সরকার । বাঙালি চলচ্চিত্র প্রযোজক, গীতিকার ও সুরকার”