[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

গোপাল নায়ক । শিল্পী জীবনী

ইতিহাসে গোপাল নায়ক এবং নায়ক গোপাল নামে দুইজন সঙ্গীতজ্ঞের পরিচয় পাওয়া যায়। গ্রন্থকার হকীন মহম্মদ তাঁহার প্রসিদ্ধ ‘মনুল মৌসুকী’ নামক গ্রন্থে দুইজন গোপালের নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ফলে, গোপাল নায়ক সমৃদ্ধে তথ্য যথাযথ ঐতিহাসিক গবেষণার অভাবে ধুয়াশাছন্ন।

গোপাল নায়ক । শিল্পী জীবনী

 

গোপাল নায়ক । শিল্পী জীবনী

 

অনেকের ধারণা এই যে, ত্রয়োদশ শতাব্দীতে আলাউদ্দীন খিলজীর সেনাপতি মালিক কাফুর দক্ষিণাত্যের দেবগিরিরাজ রামদেব যাদবকে পরাজিত করিয়া সেখানকার সভা-গায়ক গোপাল না-য়ককে সাথে করিয়া দিল্লী লইয়া আসেন এবং সঙ্গীত রসিক আলাউদ্দিন খিলজীকে (১২৯৪- ১২৯৫) ভেট দেন।

বলা বাহুল্য, খিলজীর সভাসদ এবং সর্বমুখী প্রতিভাধর আমীর খসরু আলাউদ্দীন খিলজীর বন্ধু ছিলেন। যতটুকু জানা যায়, গোপাল না-য়ক ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত দাম্ভিক এবং নিজ সমৃদ্ধে সবিশেষ সচেতন ছিলেন। ফলে আমীর খসরুর সহিত গোপাল না-য়কের মতানৈক্য ঘটে। আলাউদ্দিন খিলজী দুই সঙ্গীতজ্ঞের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণহেতু এক বিশেষ সঙ্গীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।

প্রবাদ আছে যে, আমীর খসরু গোপাল নায়কের পাণ্ডিত্যে বিশেষ বিচলিত হইয়া প্রতিযোগিতার আশ্রয় লইয়া গোপাল নায়ককে পরাজিত করেন। কিন্তু, গুনগ্রাহী আমীর খসরু গোপাল না-য়কের যথার্থ পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাইয়া আলাউদ্দীন খিলজীর দরবারে তাহার সম্মানের আসন করিয়া দেন এবং পরবর্তীকালে উভয়ের মধ্যে বিশেষ বন্ধুত্ব ঘটে। গোপাল নায়াকের আমলে ধ্রুপদ গানের প্রচলন হয় নাই।

 

Google news
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

তখনকার সময়ে প্রবন্ধ গানের প্রচলন ছিল। ছন্দ প্রবন্ধ গীতে তাঁহার বিশেষ পাণ্ডিত্য ছিল এবং তিনি বেশ কয়েকটি রাগ সৃষ্টি করিয়া গিয়াছেন বলিয়া জানা যায়। তামিল, তেলেগু, ভাষাতেও সংস্কৃত প্রবন্ধ গানকে তিনি রূপন্তরিত করিয়াছিলেন। চতুর করিনাথ এই শুনী সম্পর্কে তাহার ‘রত্নচকর’ গ্রন্থে বিশেষ প্রসংসা করিয়া গিয়াছেন।

গোপাল না-য়ক জাতিতে ব্রাহ্মণ ছিলেন এবং দেবগিরি পরিত্যাগ করিবার পর উনি সেখানে আর ফিরিয়া যান নাই, বাকী সময় দিল্লীতেই অতিবাহিত করেন এবং সেখানেই তাঁহার দেহাবসান ঘটে। ষোড়শ শতাব্দীতে আর এক গোপাল-এর নাম পাওয়া যায়। তিনি ধ্রুপদ গায়ক ছিলেন। কাহারো মতে তিনি বৈজু বাওরার শিষ্য ছিলেন।

 

গোপাল নায়ক । শিল্পী জীবনী

 

আবার কেহ মনে করেন, শৈশবে পিতৃহীন গোপাল বৃন্দাবনের প্রসিদ্ধ গায়ক হরিদাস স্বামীর আশ্রমে থাকিয়া সঙ্গীত শিক্ষা করেন। যাহা হউক ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ধ্রুপদ শৈলীর জন্ম হয় নাই। সুতরাং “ধ্রুপদীয়া গোপাল নায়ক” যে ভিন্ন সঙ্গীতজ্ঞ এবং ষোড়শ শতাব্দীর অধিবাসী ইহাতে কোন সন্দেহ থাকিতে পারে না, একজনের জীবদ্দশা তিনশ বছর স্থায়ী হওয়া অবাস্তব। তৎসময়ে বৈজনাথ মিশ্র, বুজলাল, বৈজু, বৈষুবাওরা প্রভৃতি গুণী সঙ্গীতজ্ঞদের নাম পাওয়া যায়।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment